অবশেষে কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ডস হালনাগাদ করে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের ফেসবুক কী পোস্ট করা যাবে আর কী পোস্ট করা যাবে না সে দিকনির্দেশনা দিয়েছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। অনেক বিতর্কের পরও আপত্তিকর কোনো পোস্ট, ছবি বা ভিডিও ফেসবুক কেন সরায় না? কিংবা সরকারি অনেক অনুরোধও ফেসবুক রাখে না। এসব বিতর্ক নিয়ে এতদিন মুখ বন্ধ করে ছিল ফেসবুক।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের প্রায় ১৩৯ কোটি ব্যবহারকারীর সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট বৈশ্বিক যোগাযোগের প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠেছে। এই সাইটে মানুষ তার মনের সব কথাই শেয়ার করে বা পোস্ট করার চেষ্টা করে। কিন্তু পোস্ট করা মারাত্মক কোনো কনটেন্ট মুছে দেওয়ার ক্ষেত্রে ফেসবুক বরাবরই নমনীয়তা দেখিয়েছে। এক্ষেত্রে উন্মুক্ত তথ্য বিনিময়ের উৎসাহ দেওয়ার কথা বলা হয়। কিন্তু অন্যদিকে ফেসবুকের বিশাল পাঠক ও ব্যবহারকারীদের মধ্যে বয়সের পার্থক্য যেমন রয়েছে তেমনি সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ এবং দেশভেদে আইনের ভিন্নতাও রয়েছে।
ফেসবুকে তথ্য প্রকাশের নীতিমালা থাকা সত্ত্বেও কোনো কনটেন্ট প্রকাশিত হলে তা মুছে ফেলা হবে সেটি এতদিন অস্বচ্ছ ও অপ্রাসঙ্গিক হয়ে ছিল।
এই জানিয়েছেন, ফেসবুক কোনো নীতিমালা বা মানের দিক থেকে পরিবর্তন আনছে না বরং আরও দিকনির্দেশনা দিচ্ছে ব্যবহারকারীদের’ কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ডস আপডেট সম্পর্কে ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ এমনটা জানিয়েছেন। তিনি আরও জানান, মানুষ সচরাচর জানতে চায় যে আমরা কোন কনটেন্টটা সরিয়ে ফেলি আর বিতর্কিত হলেও কোন কনটেন্টটা আমরা রেখে দিই এবং এবং কেন তা করি। তার পরিষ্কার ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে।
স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্ক্যান করে সম্ভাব্য আপত্তিকর কনটেন্ট সরিয়ে ফেলার কোনো উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনা ফেসবুকের নেই বলে জানান মনিকা বিকার্ট। আর এ কাজের জন্য ফেসবুক ব্যবহারকারীদের ওপরই নির্ভর করবে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। নীতিমালা লঙ্ঘনের বিষয়ে ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ জানাবেন ব্যবহারকারী। অভিযোগ পেলে ফেসবুকের রিভিউ টিম তা পরীক্ষা করে দেখবে।
ফেসবুকের সাধারণ নীতিমালা অনুযায়ী, সরাসরি হুমকি, ঘৃণিত মন্তব্য ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের মতো নির্দিষ্ট কনটেন্ট ফেসবুকে পোস্ট করা যাবে না বলে জানিয়েছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। তাছাড়াও দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসী গ্রুপের কোনো পোস্ট ফেসবুক রাখার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে ফেসবুক। ইসলামিক স্টেট (আইএস) মতো জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট ব্যবহার করে তাদের বার্তা ছড়াচ্ছে। সম্প্রতি বিষয়টিকে আরও স্পষ্ট করে জানিয়েছে, সন্ত্রাসী গ্রুপের পক্ষে বা কোনো সন্ত্রাসী দলের নেতার প্রশংসা, সমর্থন দিয়ে পোস্ট করা কনটেন্ট সরিয়ে ফেলবে ফেসবুক।
ফেসবুকে পর্নোগ্রাফি নিষিদ্ধ। এ ছাড়া প্রতিশোধমূলক বা অনুমতি না নিয়ে প্রকাশ করা ছবি (রিভেঞ্জ পর্নো) ফেসবুকে প্রকাশ করা যাবে না। অবশ্য, শিশুর দুধ পানের ছবি, পেইন্টিং, ভাস্কর্যের মতো বিষয়গুলোর ছবি প্রকাশ করা যাবে। এ ছাড়া আত্মহত্যায় প্ররোচনা বা আহার ব্যাধির প্ররোচনামূলক পোস্ট সরিয়ে ফেলা হবে। এ ছাড়া নারীর শরীর প্রদর্শনের ছবিও সরিয়ে ফেলার কথা জানিয়েছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। ফেসবুক থেকে আপত্তিকর পোস্ট সরাতে হলে ফেসবুকের কাছে ওই পোস্ট সম্পর্কে অভিযোগ করতে হবে।
ফেসবুকে অন্যতম সমস্যার মধ্যে একটি হলো গ্রাফিকসের মাধ্যমে সহিংস ছবি ও নগ্ন ছবি প্রকাশ। ২০১৩ সালে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ফেসবুকে সহিংস ছবি ও ভিডিও প্রকাশের বিষয়টি তারা বেশ কয়েকটি মানদণ্ডের ভিত্তিতে নির্ধারণ করবে। দীর্ঘদিন ধরেই মানুষ জবাইয়ের ভিডিও দেখানোর জন্য সমালোচিত হয়ে আসছে ফেসবুক।
No comments:
Post a Comment